Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

প্রখ্যাত ব্যক্তিত্ব

শিক্ষা-সংস্কৃতি, রাজনীতি, সমাজসেবা ও সাহিত্য চর্চাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যারা অবদান রেখেছেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজনের পরিচয় সংক্ষেপে তুল ধরা হল:

 

শামসুল হক চৌধুরী:

চর বলদিয়া গ্রামে ১৯৩৬ সালের ৩০ জুন জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৩ সালে তিনি ভূরুঙ্গামারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মেট্রিক পাশ করেন। ১৯৫৫ সালে তিনি আনন্দমোহন কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে আই.এ পাশ করেন এবং ১৯৫৭ সালে তিনি একই কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন।তার বাবার ইচ্ছা ছিল তাকে ডাক্তার বানানোর কিন্তু তিনি বাস্তব জীবনে ডাক্তার না হয়ে হয়েছিলেন রাজনীতিবিদ। প্রথম জীবনে তিনি ভূরুঙ্গামারী উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন। তিনি রাজনীতির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়ানোর পর তার শিক্ষক আব্দুল হকের পরামর্শক্রমে পারিবারিক উপাধি মন্ডলের পরিবর্তে তার নামের সাথে চৌধুরী উপাধি ব্যবহার করেন। তিনি ছিলেন একাধারে রাজনীতিবিদ, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, ক্রীড়া সংগঠক ও সাহিত্য সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষক। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে তিনি এম.পি নির্বাচিত হন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের একজন অন্যতম সংগঠক ছিলেন।নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭৩ ও ১৯৭৯ সালেও তিনি পুনরায় এমপি নির্বাচিত হন। এরপর তিনি ভূরুঙ্গামারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি ভূরুঙ্গামারী ডিগ্রী কলেজসহ বেশকিছু স্কুল, কলেজ প্রতিষ্ঠা করে এলাকার সার্বিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন। ২০০৮ সালের ৭ মে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

 

মোঃ কফিলুর রহমান:

১৯৪২ সালে দেওয়ানেরখামার গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি। পেশাগত জীবনে তিনি ব্যবসায়ী হলেও রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত আছেন। তিনি নেহাল উদ্দীন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা।

 

অধ্যাপক মোঃ মোজাম্মেল হক:

১৯৪৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর বহালগুড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি প্রভাষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৮২ সালে সহকারি অধ্যাপক, ১৯৯১ সালে সহযোগী অধ্যাপক এবং ১৯৯৭ সালে তিনি অধ্যাপক পদে পদোন্নতি লাভ করেন। দীর্ঘ চাকরি জীবনে পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য তিনি ১৯৭৮ সালে জনসংখ্যা ও শিক্ষা ওয়ার্কশপ, ১৯৮৮ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও লোক প্রশাসন ওয়ার্কশপ এবং ২০০১ সালে শিক্ষা প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ ও সনদ লাভ করেন। তিনি রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক হিসেবে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ অধ্যাপনা পেশায় নিয়োজিত থেকে কুড়িগ্রাম মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। ব্রিটিশ ভারতের সামাজিক ও রাজনৈতিক উন্নয়ন বাংলাদেশের শাসন ব্যবস্থা ও রাজনীতি, রাষ্ট্রীয় তত্ত্ব ও সংগঠন ‘বঙ্গ’ বাঙ্গালা, বাংলাদেশ: আন্দোলন-সংগ্রাম-রাজনীতি-নির্বাচন প্রভৃতি তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ। বর্তমানে তিনি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্রেজারার পদে কর্মরত আছেন।

 

জয়নাল আবেদীন ভান্ডারী:

কোচবিহার জেলার মারগঞ্জ নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তির পর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হলে তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে চলে আসেন। তিনি একাধারে কবি ও সম্পাদক ছিলেন। জয়নাল আবেদীন কোচবিহার জেলার তুফানগঞ্জ মহকুমার মারগঞ্জ থেকে এসে কুড়িগ্রাম জেলার সদয় উপজেলার বেলগাছা ইউনিয়নে বসবাস শুরু করেন। এরপর বেলগাছা থেকে তিনি ভূরুঙ্গামারীর নলেয়া নামক স্থানে বসবাস শুরু করেন। একটি কবিতায় তিনি আত্মপরিচয় দিতে গিয়ে বলেছেন,

 

আমি ভান্ডারী ছাপাখানা হয়ে এসেছি

নলেয়ার এই পল্লী কুঠিরে বসেছি।

রাজা নই তাই রাজেন্দ্র নাম ধরি না

আমি ভান্ডারী মানুষের খেদমত ছাড়া থাকি না।

 

পাকিস্তান আমলের শেষের দিকে তার সম্পাদনায় মাসিক বার্তাবহ নামে একটি পত্রিকা প্রকাশিত হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পত্রিকাটির প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যায়। প্রেসের কাজের চাপ কম থাকলে পত্রিকার কলেবরে বৃদ্ধি পেত। কাজের চাপ বেশি থাকলে পত্রিকার পৃষ্ঠা সংখ্যা কম হত। জয়নাল আবেদীন ১২টি কাব্য গ্রন্থ লিখেছেন। প্রেম ফুল, প্রেম ফল, প্রেম তরী, প্রেম বৈঠা, প্রেম গাছ, প্রেম পাতা প্রভৃতি তার অপ্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ। বার্তাবহের কভার পেজে তার অপ্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের তালিকা ছাপানো হত। ১৯৯৩ সালের ১০ আগস্ট তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

 

আব্দুল হাই শিকদার :

১৯৫৭ সালের ১ জানুয়ারি ছাট গোপালপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমান সময়ের কবিদের মধ্যে তিনি অন্যতম। কবিতা, গল্প ও শিশুসাহিত্যে তিনি তার প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। এ পর্যন্ত তার আশিটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। তিনি শেকড় সন্ধানী কবি হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেছেন। এছাড়া তিনি একজন ভাল উপস্থাপক ও প্রামাণ্য চিত্র নির্মাতা।কর্ম জীবনে তিনি নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালকসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বাংলাদেশের প্রথম নিয়মিত মাসিত সাহিত্য পত্রিকা ‘এখন’ এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ছিলেন। তিনি তার প্রতিভার স্বীকৃতি স্বরূপ বাংলা একাডেমী পুরস্কারসহ আরও অনেক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। তার প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে আশি লক্ষ ভোর, আগুন, আমার ভাই, কবি তীর্থ চুরুলিয়া প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।

 

এ. এস. এম মহিউদ্দিন আলমগীরঃ

১৯৪৮ সালের ১ নভেম্বর উলিপুর থানার দড়িচর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৫ সালে ভূরুঙ্গামারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে হেড মৌলভী হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি একই স্কুলে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ২০০৮ সালের অক্টোবর মাসে চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। তিনি কবি ও ইসলামী চিন্তাবিদ। শতাব্দীর অভিশাপ, কেয়ামতের বিভীষিকা, ভোরের পাখি, রক্ষ সিন্দুর বেলাবূীম প্রভৃতি তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ। 

 

 

আব্দুল হাইঃ 

১৯৬২সালের ৯ অক্টোবর ভরতেরছড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতির সাথে জড়িত আছেন। পেশাগত জীবনে তিনি চরভূরুঙ্গামারী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক। সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ার‌ম্যান। তিনি এলাকার উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। 

 

 

তৈয়বুর রহমানঃ

১৯৬৩ সালে পাাটেশ্বরীতে জন্মগ্রহণ করেন। এলএলবি পাশ করলেও আইন পেশায় না জড়িয়ে তিনি প্রাইমারী শিক্ষকতা করছেন। তিনি বাংলাদেশ বেতার রংপুর কেন্দ্রের তালিকাভূক্ত গীতিকার ও নাট্যকার। জীবন যুদ্ধ, শিক্ষার আলো, যুদ্ধের নয় মাস প্রর্ভৃতি তার উল্লেখযোগ্য নাটক। তিনি বর্ণালী সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি।